বিদেশ থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানুন আজকের পোস্টে। বিকাশ বাংলাদেশের জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংক গুলোর অন্যতম। এটি সুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের কাছেও পরিচিত একটা মোবাইল অর্থিক সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান। বিকাশ অ্যাপ থেকে সহজে টাকা লেনদেন, পে বিল ও মোবাইল রিচার্জ সহ যাবতীয় কাজ করার সুবিধার জন্য এটি সকলের পছন্দের শীর্ষে।
তাই অনেক বাংলাদেশি প্রবাসী ভাইয়েরা বিদেশ থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। আজকের পোস্টে ঐ সকল ভাইদের জন্য বিদেশ থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কের বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ধৈর্যসহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।
বিদেশ থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিদেশ থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য সবার প্রথমে আপনার মোবাইল কিংবা কম্পিউটারের ডাটা সংযোগটি চালু করুন। তারপর Google play store গিয়ে সার্চ বারে bkash লিখে সার্চ করুন এবং সার্চ রেজাল্টে আশা প্রথম apps টি install করে নিন। অথবা এখানে ক্লিক করে বিকাশ অ্যাপসটি ইন্সটল করে নিন। Apps টি সম্পূর্ন install হওয়ার পর Open করুন। তাহলে আপনি দুটো অপশন দেখতে পাবেন।
- লগইন/ রেজিস্ট্রেশন এবং
- বিকাশ নম্বর পরিবর্তন
‘লগইন ও রেজিস্ট্রেশন’ অপশন থেকে নতুন বিকাশ একাউন্ট খোলা ও লগইন করতে পারবেন এবং বিকাশ নম্বর পরিবর্তন অপশন থেকে মাইগ্রেট অর্থাৎ বিকাশ নম্বর পরিবর্তন করতে পারবেন।
এখন আপনার যদি বাংলাদেশি কোন সিমে বিকাশ একাউন্ট থাকে। তাহলে আপনি চাইলে বিদেশ যাওয়ার পর নম্বর পরিবর্তন অপশনে ক্লিক করে বাংলাদেশি নম্বরের স্থলে আপনার বিদেশ নম্বর সেটাপ করতে পারেন। এতে করে আপনি বিদেশ থেকেও বিকাশ ব্যবহার করতে পারবেন। আবার কেউ যদি বিদেশে বিকাশ একাউন্ট খুলে থাকেন। তাহলে দেশে থেকে ফিরে আসার পর পূর্বের ন্যায় নম্বর পরিবর্তন অপশন থেকে বিদেশি নম্বর পরিবর্তন করে বাংলাদেশি নম্বর যুক্ত করে নিতে পারবেন।
কিন্তু আপনি যেহেতু বিদেশ থেকে নতুন বিকাশ একাউন্ট খুলবেন সেই জন্য ’লগইন/রেজিস্ট্রেশন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনি যে দেশ থেকে একাউন্ট করছেন সেই দেশের কোড এবং মোবাইল নম্বর চলে আসবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি সিঙ্গাপুর থেকে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান তাহলে আপনি সিঙ্গাপুরের মোবাইল নম্বরটি দিয়ে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন। এখন আপনার সিমে একটি ভেরিফিকেশন কোড চলে আসবে সেই OTP কোডটি বসিয়ে পরবর্তী ধাপে ক্লিক করুন।
পরবর্তী অপশনে ক্লিক করার পর আপনার সামনে বিকাশের Terms and condition অর্থাৎ শর্তাবলী গুলো প্রদর্শিত হবে। শর্তাবলী গুলো ভালো করে পড়ে ‘আমার সম্মতি আছে’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে দেশ ত্যাগ/আগমনের স্ট্যাম্পের (সীলের) ছবি আপলোড করতে বলা হবে।
স্ট্যাম্পের (সীলের) ছবি এটি আপনি আপনার পাসপোর্টের ভিতরে পেয়ে যাবেন। এখন ছবি তোলার জন্য ‘ছবি তুলতে ট্যাপ করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার ক্যমরাটি Open হয়ে যাবে। তারপর সঠিকভাবে পাসপোর্টের ঐ পৃষ্ঠার ছবি তুলে নিন। ছবি তোলা হয়ে গেলে Ok ক্লিক করে কনফর্ম করে দিন।
ছবি তোলা শেষে নিচে থেকে ‘পরবর্তী’ বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার ফোনের ক্যামেরা ওপেন হয়ে যাবে। এখন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের Front part ছবি তুলে submit অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে পুনরায় আবার ও ক্যামেরা ওপেন হয়ে যাবে। এখন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের Back side ছবি তুলে submit অপশনে ক্লিক করুন।
যারা বিদেশ যাওয়ার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র দেশে রেখে গেছেন। তারা দেশের কাউকে বলবেন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি তুলে পাঠিয়ে দিতে। তারপর সেই ছবি আপনি অন্য একটি ফোনে নিয়ে নিবে এবং যেই ফোন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলছেন। সেই ফোন দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের Front side ও Back side এর ছবি তুলে Submit করুন। অব্যশই ছবি গুলো যেনো ১০০% স্পষ্ট হয়। Submit বাটনে ক্লিক করার পর আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সকল তথ্য গুলো চলে আসবে যেমন:
- নাম
- পিতার নাম
- মাতার নাম
- জন্ম তারিখ
- NID নম্বর
- রক্তের গ্রুপ ও
- ব্যক্তিগত ঠিকানা ইত্যাদি
এখন যদি আপনার সকল তথ্য সঠিক থাকে তাহলে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সম্পর্কে আরোও তথ্য দিন নামে অপশন দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আপনার লিঙ্গ সিলেক্ট করুন। তারপর আয়ের উৎস সিলেক্ট করুন। তারপর অনুমানিক আয়ের উৎস এবং পেশা সিলেক্ট করে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে নতুন একটি পেইজ চলে আসবে। যেখানে আপনার ছবি তোলার জন্য বলা হয়েছে।
এখন ছবি তোলার জন্য নিচে থেকে ‘ছবি তুলুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে গোল আবৃত মতো ক্যামেরা ওপেন হয়ে যাবে। এখন গোল আবৃত মধ্যে আপনার ফেইজটা রেখে দুই থেকে তিনবার চোখের পলক ফেলুন। তাহলে আপনার ছবি উঠে যাবে এবং submit হয়ে যাবে।
এখন আপনার সামনে অনুগ্ৰহ করে ‘নিশ্চিত করুন’ নামে অপশন পেয়ে যাবেন। নিশ্চিত করুন অপশনে ক্লিক করলে বিকাশ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আপনার তথ্য গুলো যাচাই করবে। তবে সাধারণত ৫-১০ মিনিটের মধ্যে এটি যাচাই হয়ে যায়। যদি কোন কারনে যাচাই এসএমএস আসতে দেরি হয় তাহলে কনফার্মেশন এসএমএস এর জন্য অপেক্ষা করুন।
SMS আসার পর আবারও নিশ্চিত করুন অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে আসবে এবং পিন সেট করতে বলা হবে। নতুন পিন সেট করতে নিচে থেকে ‘নতুন পিন সেট করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। যদি নতুন পিন সেট করুন অপশনটি সাদা হয়ে থাকে। তাহলে কনফার্মেশন এসএমএস আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এসএমএস আসা পর অপশনটি রঙ্গিন হয়ে যাবে। তখন আপনি নতুন পিন সেট করতে পারবেন।
‘নতুন পিন সেট করুন’ অপশনে ক্লিক করলে আপনার ফোন নম্বরটি প্রদর্শিত হবে এবং আপনার ফোনে একটি OTP কোড যাবে। সেটি দিয়ে নিশ্চিত করলে আপনাকে ৫ সংখ্যার একটি পিন সেট করতে বলা হবে। আপনার পছন্দ অনুযায়ী ৫ সংখ্যার একটি জটিল পিন সেট করুন। যেমন: ৮৪০৩৬ বা ২৯৭৪২ ইত্যাদি। তারপর পিন নম্বরটি কোথাও সংগ্রহ করে রাখুন। কেননা পরবর্তীতে বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা লেনদেন সহ যাবতীয় কাজ করতে পিন নম্বরটি প্রয়োজন হবে। পিন নম্বর সেট করা হয়ে গেলে ‘নিশ্চিত’ করুন অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার বিদেশ থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়ে যাবে।
এখন আপনার বিকাশ একাউন্টে login করতে পিন নম্বর দিয়ে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে বিকাশ একাউন্টের নাম সেট করতে বলা হবে। এখন আপনার নামের প্রথম অংশ এবং শেষের অংশ লিখে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে প্রোফাইল পিকচার যুক্ত করুন অপশন চলে আসবে। সেখান উপর থেকে ‘পরে করুন’ অপশনে ক্লিক করে এটি স্কিপ করুন। তাহলে আপনার বিকাশ একাউন্টে সম্পূর্ণ Login হয়ে যাবে।
বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠান
একাউন্টে লগইন হওয়ার পর উপর থেকে ‘ব্যালেন্স দেখুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে দেখতে পবানে আপনার একাউন্টে ২৫ টাকা ব্যালেন্স দেখাচ্ছে। যেটি আপনি নতুন বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য বোনাস পেয়েছেন। এখন প্রবাস থেকে বাংলাদেশের ফোন নম্বরে সেন্ড মানি করার জন্য Send money অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে সেন্ড মানি করার জন্য ফোন নম্বর চলে আসবে সেখান থেকে বাংলাদেশের একটি বিকাশ একাউন্ট ফোন নম্বর দিয়ে এরো অপশনে ক্লিক করুন।
তাহলে আপনার সামনে Amount অপশন চলে আসবে। সেখান থেকে আপনি কত টাকা Send money করতে চাচ্ছেন সেটা লিখে আবারও এরো চিহ্নতে ক্লিক করুন। তারপর আপনার বিকাশ Pin দিয়ে এরোতে ক্লিক করুন। তাহলে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে সেখান থেকে বাংলাদেশ থেকে যেভাবে সেন্ড মানি করেন সেই ভাবে সেন্ড মানি করতে ‘ট্যাপ করে ধরে রাখুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সেন্ড মানি সম্পন্ন হবে।
এখন আপনি আপনার প্রবাসী বিকাশ একাউন্টে আরোও দুটি অপশন দেখতে পাবেন
- মোবাইল রিচার্জ এবং
- রেমিটেন্স
আপনি চাইলে মোবাইল রিচার্জ অপশনে ক্লিক করে বাংলাদেশের যেকোন নম্বরে রিচার্জ করতে পারবেন। তাছাড়া ও রেমিটেন্স অপশনে ক্লিক করে পেওনিয়ার একাউন্ট যুক্ত করতে পারবেন এবং বিদেশ থেকে পেওনিয়ারের টাকা বিকাশের মাধ্যমে তুলতে পারবেন।
এই নিয়মটি ফলো করে আপনি বিদেশ থেকে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেতে চোখ রাখুন বঙ্গভাষা ওয়েবসাইটে।
[…] আরোও পড়ুন: বিদেশ থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম […]
[…] আরোও পড়ুন: বিদেশ থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম […]