বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ও বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা আইডিয়া ২০২৩

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বহুল প্রচলিত মোবাইল ব্যাংকিং গুলো অন্যতম হলো বিকাশ। তাই আপনি যদি আপনার দোকানে বিকাশ এজেন্ট নিতে পারেন তাহলে প্রতিদিন কমপক্ষে 500 থেকে 10 হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকের কাছে এটি অজানা যে কিভাবে বিকাশ এজেন্ট নিতে হয়?

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ নাকি ক্ষতি? এজেন্ট পেতে কত টাকা ইনভেস্ট করতে হবে? দালাল ছাড়া বিকাশ এজেন্ট নেওয়া সম্ভব কিনা? অনলাইনে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ইত্যাদি। আজকের পোস্টে আমরা এই সমস্ত বিষয়ে আলোচনা করব। তো চলুন শুরি করি। 

বিকাশ এজেন্ট কি? 

এজেন্ট একটি বিশেষ্য পদ যার অর্থ হলো ব্যবসায়ী বা অপর কাহারও প্রতিনিধিত্ব করা। অর্থাৎ বিকাশের হয়ে বিকাশের জন্য কাজ করে যাওয়াকে বিকাশ এজেন্ট বলে। যেসকল ব্যক্তি বিকাশ এজেন্ট পেয়ে থাকেন তারা প্রত্যেকে পরোক্ষভাবে বিকাশের একজন কর্ম হিসেবে কাজ করে থাকেন এবং নিজের পারিশ্রমিক হিসেবে বিকাশ দ্বারা অর্থপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। 

 

বিকাশ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয়?

আপনার যদি একটি নিজেস্ব দোকান কিংবা বৈধ ব্যবসা থাকে তাহলে আপনি বিকাশ এজেন্ট নিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অব্যশই ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্স দেখাতে হবে। চলুন জেনে নি কিভাবে বিকাশ এজেন্ট নিবেন এবং বিকাশ এজেন্ট নিতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে।

নোট: রকেট ও নগদ এজেন্ট সম্পর্কে জানতে আমাদের কমেন্ট করুন এই পোস্টের কমেন্ট বক্সে

  • দোকানের ট্রেড লাইসেন্স
  • যার নামে দোকান তার ভোটার ID কার্ড
  • একটি ফ্রেশ এজেন্ট নম্বর (যেটাতে পূর্বের বিকাশ একাউন্ট নেই)
  • ই টিন সার্টিফিকেট
  • যার নামে ট্রেড লাইসেন্স তার ৩ কপি ছবি 
  • দোকানের সিল মহর।

উপযুক্ত কাগজপত্র নিয়ে বিকাশ সেলস ডিস্ট্রিবিউটর অফিস প্রতিনিধির নিকট আবেদন করতে হবে। তারা আপনার কাগজপত্র সঠিকভাবে যাচাই-বাছাইয়ের পর আপনাকে বিকাশ এজেন্ট দেওয়ার উপযুক্ত মনে হলে ট্রেনিং- এ ডাকা হবে। ট্রেনিংয়ের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আপনার সিমটিকে লেনদেনের জন্য সক্রিয় করে দেওয়া হবে। 

আরোও পড়ুন: জনপ্রিয় ১০টি AI টুলস সম্পর্কে 

এছাড়াও আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমেও বিকাশ এজেন্টের আবেদন করতে পারেন। যেকোন একটি উপায় অবলম্বনে আপনি খুব সহজে বিকাশে নিতে পারবেন। 

 

বিকাশ এজেন্ট পাওয়ার শর্তসমূহ

আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট নিতে চান তাহলে আপনাকে নিম্নোক্ত শর্তগুলোর সাথে একমত হতে হবে যেমন:

  • প্রতিদিন সর্বনিম্ম ২,০০০ টাকা পর্যন্ত লেনদেন করতে হবে ( ক্যাশ ইন বা ক্যাশ আউট প্রযোজ্য)
  • এজেন্ট নম্বরে সর্বনিম্ম ৭,০০০ টাকা ব্যালেন্সে রাখতে হবে।
  • কোন প্রকার অবৈধ লেনদেন বা প্রতারণামূলক কাজ করা যাবে না।

বিকাশ এজেন্ট

অনলাইনে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

আপনি চাইলে অপলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের আবেদন করতে পারবেন। বিকাশ এজেন্ট আবেদন করার জন্য প্রথমে যেকোন ব্রাউজার থেকে চলে আসুন এই ঠিকানায়- Bkash agent ওয়েবপেইজটাতে আসার পর আপনার সামনে বিকাশ এজেন্ট ফরম দেখতে পাবেন। এখন ফরমে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো যেমন: 

  • দোকানের নাম
  • ডিস্ট্রিক
  • লোকেশন
  • দোকানীর নাম
  • মোবাইল নম্বর
  • ইমেল এড্রেস 
  • অন্যান্য
  • NID নম্বর
  • ট্রেডলাইসেন্স নম্বর ও 

সব গুলো তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। তথ্যগুলো ঠিক থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিকাশ কাস্টমার কেয়ার থেকে আপনাকে যোগাযোগ করা হবে এবং পরবর্তী কার্যকর্ম বলে দেওয়া হবে।

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা কত টাকা লাভ

বর্তমান সময়ে বিকাশ তার এজেন্টদের প্রতি হাজারে ৪.১০ টাকা করে লাভ দিয়ে আসছে। যার পরিমান প্রতি লাখে ৪১০ টাকা। আপনি যদি কম পক্ষে দৈনিক ১ লক্ষ টাকা লেনদেন করতে পারেন তাহলে প্রতিদিন ৪১০ টাকা করে ৩০ দিনে ১২,৩০০ টাকা করে আয় করতে পারবেন। তবে যত বেশি লেনদেন করবেন তত বেশি আয় করবেন। আর লেনদেনের সময় বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করলেও আরোও বেশি অর্থ লাভবান হতে পারেন।

 

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা আইডিয়া

বিকাশ এজেন্ট নেওয়ার পূর্বে কিছু বিষয় মাথায় রেখে কাজ করতে পারলে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন। যেগুলো হলো:

এজেন্ট ব্যবসার স্থান নির্বাচন

যেকোন ব্যবসার সফলতা নির্ভর করে তার বিক্রয়ের ওপরে। তাই বিকাশ এজেন্ট নেওয়ার পূর্বে একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করা অত্যান্ত জরুরি। 

আপনি যদি গার্মেন্টস, রেস্টুরেন্ট, বড় মার্কেট অথবা শপিংমলের পাশে বিকাশ এজেন্ট নিতে পারেন তাহলে খুব বেশি লাভবান হতে পারবেন। এছাড়াও অন্য ব্যবসার পাশাপাশি কিংবা ফ্লাই ওভার বা ওভার ব্রীজ অথবা যেখানে লোকজনের সমাগম বেশি সেসব জায়গায় ও বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

পর্যাপ্ত মূলধন রাখা

বিকাশ এজেন্ট শুরু করতে যদিও তেমন বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয় না। তবে সর্বনিম্ম ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মধ্যে এজেন্ট ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। এছাড়াও স্থান ও চাহিদা ভেদে মূলধনের পরিমান কম বেশি রাখা যাবে। তবে মনে রাখবেন আপনি যদি একজন কাস্টমারকেও সার্ভিস দিতে পারেন। তাহলে তার থেকে কিছুটা অর্থ হলেও উপার্জন করতে পারবেন। তাই কাউকে ফিরিয়ে না দিয়ে সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করুন। 

বিকাশ অফারে চোখ রাখুন

বিকাশ বিভিন্ন সময় ক্যাশ আউট ও ক্যাশ ইন অফার দিয়ে থাকে। আপনি চাইলে সেসব অফার দেখে আপনার এজেন্ট নম্বর থেকে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট করতে পারেন এতে কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। ছাড়াও যেসব দোকানে বিকাশ এজেন্টের পাশাপাশি ফেক্সিলোড সিস্টেম রয়েছে তারা বিকাশ এজেন্ট থেকে আরোও বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। 

কেননা বিভিন্ন সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ফেক্সিলোড করার বিনিময় বিকাশ ক্যাশব্যাক আফার দিয়ে থাকে। আপনি যদি আপনার ফেক্সিলোড গ্রাকদের বিকাশ থেকে সরাসরি ফেক্সিলোড করে দিতে পারেন তাহলে সেই ক্যাশব্যাকের অর্থ আপনার এজেন্ট নম্বর যোগ হবে। এছাড়াও আপনি গ্রহকদের বিকাশ একাউন্ট খুলে দেওয়া  মাধ্যে রেফার বোনাস হিসেবে ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। 

বিকাশ ব্যবসায় সাবধানতা 

বিকাশ অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। কেকনা একটি ভুলে আপনার বিকাশ ব্যবসায় লাল বাতি জ্বলে উঠতে পারে। তাই অব্যশই নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রাখুন।

  • লেনদের পর বিকাশ ব্যালেন্স চেক করুন
  • প্রয়োজন হলে গ্রাহক থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করুন
  • টাকা পাঠানোর পূর্বে নম্বর সঠিক হয়েছে কিনা চেক করুন
  • অবৈধ লেনদেন পরিহার করুন
  • নিজের পিন কোড গোপন রাখুন
  • অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি এড়াতে নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন
  • টাকা লেনদেন গড়মিল হলে ট্রানজেকশন চেক করুন
  • উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া অর্থ হস্তক্ষেপ করবেন নাবিকাশ 

ছবি ও তথ্যসূত্র বিকাশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 Comments

Discover more from বঙ্গভাষা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading