সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের পোস্টে। বর্তমান সময়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রথম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত 2025 সালের শিক্ষা বর্ষের ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু 2025 সালে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় থেকে কোন ভর্তি ফরম দেওয়া হয়নি। কারণ এই বছর ভর্তির সকল কিছু অনলাইনের মাধ্যমে করতে হবে।
আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো। কিভাবে আপনি আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করবেন। আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে এবং আবেদন করতে কত টাকা ফি জমা দিতে হবে ইত্যাদি সম্পর্কে। তাই ধৈর্য সহকারে আজকের পোস্টটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
শূন্য আসন সংখ্যা চেক করার নিয়ম
সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটারের ডাটা সংযোগ সক্রিয় করুন। তারপর আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটারে থাকা Google Chrome Browser ওপেন করুন এবং সার্চ অপশনে gsa.teletalk.com.bd লিখে সার্চ করুন।তাহলে আপনাকে সরাসরি সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করার ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে এবং সেখানে এমন একটি ইন্টারফেস শো করবে।
এখন আপনি 2নং অপশনে দুটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- সরকারি বিদ্যালয় ভর্তির আবেদন এবং
- বেসরকারি বিদ্যালয় ভর্তির আবেদন
এখন আপনি যদি সরকারি বিদ্যালয় ভর্তি হতে চান। তাহলে ‘সরকারি বিদ্যালয় ভর্তির আবেদন’ অপশনে ক্লিক করুন। আর আপনি যদি বেসরকারি বিদ্যালয় ভর্তি হতে চান। তাহলে বেসরকারি বিদ্যালয় ভর্তির আবেদন অপশনে ক্লিক করুন। এখন আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী অপশন সিলেক্ট করুন।
আরোও পড়ুন: FanFare app থেকে ইনকাম করুন ২০২৪ | বিকাশ পেমেন্ট
উদাহরণ স্বরূপ, আপনি সরকারি বিদ্যালয় ভর্তি হতে চাচ্ছেন। তাহলে ‘সরকারি বিদ্যালয় ভর্তির আবেদন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে এমন একটি ইন্টারফেস শো করবে।
এখন আপনি উপরে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- হোম
- শূন্য আসনের তথ্য
- নতুন আবেদন
- আবেদনপত্রের কপি ডাউনলোড
- ভুল আবেদন মুছে ফেলুন
- ফি প্রদানের আপডেট
- ইউজার আইডি পুনরুদ্ধার এবং
- সাহায্য
এখন আপনি ‘শূন্য আসনের তথ্য’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে প্রত্যেকটি জেলা ভিত্তিক বিদ্যালয়ের নাম চলে আসবে। এখন আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী বিদ্যালয় সিলেক্ট করুন এবং পাশে আপনার শ্রেণীর সিলেক্ট করুন। এখন সকল অপশন সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে নিচে থেকে ‘Submit’ বাটনে ক্লিক করুন।
তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে আপনার সিলেক্ট করা বিদ্যালয় কতগুলো শূন্য আসন সংখ্যা রয়েছে সেটি দেখতে পাবেন। এখন আপনি চাইলে শূন্য আসন সংখ্যা গুলো ভালোভাবে চেক করে নিতে পারবেন। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন করতে হয়।
সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করার নিয়ম
সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথম আপনি মোবাইল অথবা কম্পিউটার থেকে সরকারি ও বেসরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। তারপর উপরে লক্ষ্য করলে সেখানে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। তাহলে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করার জন্য উপর থেকে ‘নতুন আবেদন’ অপশনে ক্লিক করুন।
তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে কিছু নির্দেশনা দেখতে পাবেন। এখন আপনি সেখান থেকে নির্দেশনা গুলো ভালোভাবে পড়ুন। তারপর স্ক্রোল করে নিচে নামলে এমন একটি ইন্টারফেস শো করবে।
এখন আপনি যদি উপরে উল্লেখিত পিকচাটিতে লক্ষ্য করেন। তাহলে সেখানে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- নাম
- জন্ম তারিখ
- জন্ম নিবন্ধনের নম্বর
- শিক্ষার্থীর ধরন/ জেন্ডার
- মোবাইল নম্বর
- মোবাইল নম্বরটি আবার লিখুন
- পিতার নাম
- পিতার এনআইডি/জন্ম নিবন্ধন/ পাসপোর্ট নম্বর
- মাতার নাম এবং
- মাতার এনআইডি/ জন্ম নিবন্ধ/পাসপোর্ট নম্বর
তাহলে আপনি আপনার সন্তানের তথ্য অনুযায়ী উপরে উল্লেখিত অপশনগুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন। এখানে অবশ্যই আপনাকে আপনার সন্তানের ডিজিটাল জন্ম সনদের তথ্য অনুযায়ী অপশন গুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। তারপর নিচে আপনার সন্তানের পিতা এবং মাতার তথ্য দিয়ে বাকি অপশন গুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন।
আরোও পড়ুন: সম্পূর্ণ ফ্রিতে টাকা ইনকাম অ্যাপ ২০২৪।
এখানে অবশ্যই আপনাকে আপনার সন্তানের ডিজিটাল জন্মস্থান অনুযায়ী অপশন গুলো পূরণ করতে হবে। তারপর নিচে দুটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- অভিভাবকের নাম এবং
- অভিভাবকের এনআইডি/ জন্ম নিবন্ধ/পাসপোর্ট নম্বর
এখন আপনি যার জন্য আবেদন করছেন। তার যদি পিতা এবং মাতা অবর্তমান থাকে। অর্থাৎ, আপনার পিতা-মাতা যদি মৃত্যু থাকে। তাহলে এখানে পিতা-মাতার অবর্তমানে অভিভাবকের তথ্য দিতে হবে। এখন ‘অভিভাবকের তথ্য’ অপশনে আপনার অভিভাবকের নাম এবং অভিভাবকের এনআইডি/ জন্ম নিবন্ধ/পাসপোর্ট নম্বর অনুযায়ী অপশন গুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন।
আর আপনার সন্তানের পিতা এবং মাতা যদি জীবিত থাকে। তাহলে অপশনগুলো পুরন করার দরকার নেই। তারপর আবারোও স্কোল করে নিচে নামুন। তাহলে সেখানে ‘শ্রেনী’ অপশন দেখতে পাবেন। তাহলে আপনি আপনার সন্তানকে যে শ্রেনীতে ভর্তি করতে চাচ্ছেন।
সেই শ্রেনি সিলেক্ট করুন। তারপর নিচে আপনার সন্তানের পূর্ববর্তী স্কুলের নাম এবং পূর্ববর্তী শ্রেনী সিলেক্ট করুন। এখানে অবশ্যই আপনাকে স্টার দেওয়া অপশন গুলো পুরন করতে হবে। অন্যথায়, আপনার আবেদনটি বাতিল হয়ে যাবে। তারপর আবারোও স্কোল করে নিচে নামলে বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা অপশন দেখতে পাবেন।
এখন আপনি ‘বর্তমান ঠিকানা’ অপশনে অনেক গুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- বিভাগ
- জেলা
- থানা এবং
- পোষ্ট কোড
তাহলে আপনি আপনার সন্তানের ‘বর্তমান ঠিকানা’ অনুযায়ী উপরে উল্লেখিত অপশনগুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন। তারপর নিচে ‘স্থায়ী ঠিকানা’ অপশন দেখতে পাবেন এবং সেখানে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- বিভাগ
- জেলা
- থানা এবং
- পোষ্ট কোড
এখন উপরে উল্লেখিত ‘স্থায়ী ঠিকানা’ অপশনে আপনার সন্তানের ‘স্থায়ী ঠিকানা’ অনুযায়ী অপশনগুলো সঠিকভাবে পুরন করুন। তারপর আবারোও স্ক্রোল করে নিচে নামুন। তাহলে সেখানে ‘ভার্সন’ নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। অর্থাৎ, আপনি আপনার সন্তানকে যে ভার্সনে ভর্তি হতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করুন। তারপর নিচে আপনি তিনটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- বিভাগ
- জেলা এবং
- থানা
তাহলে উপরে উল্লেখিত ‘বিভাগ’ অপশনে আপনি আপনার সন্তানকে কোন বিভাগের স্কুলে ভর্তি করতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করুন। তারপর কোন জেলার স্কুল এবং থানা সেটি সিলেক্ট করুন। এখন নিচে ‘বিদ্যালয়ের তালিকা দেখান’ নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। এখন আপনি ‘বিদ্যালয়ের তালিকা দেখান’ অপশনে ক্লিক করুন।
তাহলে আপনি দেখতে পাবেন আপনি যে জেলা, থানা এবং বিভাগ সিলেক্ট করেছেন। সেই থানার ভিতরে যে যে সরকারি স্কুলগুলো রয়েছে। সকল স্কুলের নাম শো করবে। এখন আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী স্কুলের নাম সিলেক্ট করুন এবং তারপাশে কোটা অপশন দেখতে পাবেন। এখন আপনার যদি কোন কোটা থাকে। তাহলে সেটি সিলেক্ট করুন।
তারপর স্ক্রোল করে আবারোও নিচে নামুন। তাহলে ‘প্রার্থীর ছবি’ অপশন দেখতে পাবেন। এখানে আপনার সন্তানের একটি ছবি আপলোড করতে হবে। (ছবির সাইজ 300*300 পিক্সেল এবং 100 কিলোবাইটের নিচে)। তাহলে Choose Photo অপশনে ক্লিক করে আপনার সন্তানের একটি ছবি আপলোড করুন।
তারপর নিচে থেকে ‘আমি অঙ্গীকার করছি…সকল তথ্য সঠিক’ অপশনে টিক চিহ্ন দিয়ে Submit অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে ‘আবেদনটি সঠিকভাবে সাবমিট হয়েছে’ লেখা চলে আসবে।
এখন আপনি আবারোও আপনার এপ্লিকেশন ফর্মটি ভালোভাবে চেক করুন। যদি এপ্লিকেশনটিতে কোন ভুল থাকে। তাহলে ‘এখানে ক্লিক করুন’ অপশনে ক্লিক করে তথ্যটি ডিলিট করে আবারোও নতুন করে আবেদন করুন। এখানে অবশ্যই আপনাকে অ্যাপ্লিকেশনটি সাবমিট করার আগে তথ্যটি সঠিক করতে হবে।
এখানে আপনি যদি একবার আপনার আবেদনের জন্য পেমেন্ট করেন। তাহলে আপনি আপনার ভুল তথ্যটি এডিট অথবা ডিলেট করতে পারবেন না। এখন আবেদনের সকল তথ্য সঠিক থাকলে আপনি আবেদনের অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করে নিন। এখন আপনাকে যে কাজ করতে হবে সেটি হলো: যেকোন কম্পিউটার দোকান থেকে অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটি প্রিন্ট করে নিতে হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পরে আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করার পরে পেমেন্ট করতে হয়।
অনলাইনে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি পেমেন্ট করার নিয়ম
সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করার পরে আপনাকে অনলাইনে পেমেন্ট করতে হবে। এখন পেমেন্ট করার জন্য প্রয়োজন হবে একটি টেলিটক সিম। অন্যথায়, আপনি সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদনের পেমেন্ট করতে পারবেন না। অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট করার জন্য অবশ্যই আপনার টেলিটক সিমে ব্যালেন্স থাকতে হবে।
অর্থাৎ, আপনার সিমে রিচার্জ করে ব্যালেন্স রাখতে হবে। টেলিটক সিমে কোনো প্রকারের বিকাশ বা মোবাইল সার্ভিস নয়। এখানে আপনাকে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন করার পরে টেলিটক সিমের ভিতরে সমপরিমাণ ব্যালেন্স রাখতে হবে। যখনি আপনার আবেদন পুরো ক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে। তখন আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে 120 টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার পরে পেমেন্ট করতে হবে। এখন পেমেন্ট করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার টেলিটক সিমে 120 টাকা রিচার্জ করতে হবে। তারপর এসএমএস অপশনে প্রবেশ করুন।
তারপর Massage অপশনে GSA লিখে আপনার ইউজার আইডি লিখুন। তারপর এই মেসেজটি 16222 এই নম্বরে পাঠিয়ে দিন। তাহলে ফিরতি এসএমএসে আপনার ইউজার আইডি ও জন্ম নিবন্ধন সহ অন্যান্য তথ্য দেখতে পাবেন।
একই সাথে সেখানে একটি পিন নম্বর দেখতে পাবেন। এখন আপনাকে পিন নম্বরটি কোথাও নোট করে নিতে হবে বা কপি করে নিতে হবে। তারপর আবারো ও GSA<space>YES <space>your pin number লিখে পাঠিয়ে দিন 16222 নম্বর।
তাহলে আপনাকে congrats! জানি আপনার সিম থেকে ১১০ টাকা কেটে নেওয়া হবে। একই সাথে সেখানেই আপনার নাম, জন্ম নিবন্ধন, ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেখতে পাবেন। যেটি ব্যবহার করে আপনি পরবর্তীতে আপনার রেজাল্ট দেখতে পাবেন।
সরকারি ও বেসরকারি স্কুল ভর্তি ২০২৫ শেষ তারিখ কবে?
এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বলা যায়, যে সরকারি স্কুল ভর্তি ২০২৫ আবেদন শুরু হয়েছে। ১২/১১/২০২৪ যেটি শেষ হবে আগামী ৩০/১১/২০২৪ তারিখ বিকেল ৫টা পর্যন্ত। অর্থাৎ ২০২৪ সালের নভেম্বরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তি আবেদনের সুযোগ রয়েছে।
এটা ছিল অনলাইনে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়া।এরকম আরো শিক্ষণীয় পোস্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের বঙ্গভাষা ওয়েবসাইটে। ধন্যবাদ!h