কম টাকার মধ্যে লাভজনক ৫টি ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে আজকের পোস্টে আলোচনা করা হবে। তাই ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইল। আশা করা যায় আর্টিকেলটি পড়ে আপনি একজন সফল উদ্যোগতা হতে পারবেন।
কম টাকার মধ্যে লাভজনক ৫টি ব্যবসা আইডিয়া
আজ কম টাকার মধ্যে লাভজনক ৫টি ব্যবসা আইডিয়া শেয়ার করব। যেগুলো আপনি কম খরচের মধ্যে শুরু করে, অল্প সময়ের মধ্যে লাভবান হতে পারবেন। ব্যবসা শুরু করার পূর্বে মার্কেটে তার চাহিদা কত টুকু সেটা জানা জরুরি। আপনি যদি এমন প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করেন যেটার মার্কেটে চাহিদা কম। তাহলে আপনার বিক্রিও কম হবে। এতে করে আপনি তেমন একটা লাভবান হতে পারবেন না। তাই কম কিংবা বেশি বাজেটের ব্যবসা হোক না কেন। সঠিক চিন্তাধারা ছাড়া সব ব্যবসায় লস বা লোকশানের দিকে মোড় নিবে।
কম টাকার মধ্যে লাভজনক ৫টি ব্যবসা
কম টাকা বিনোয়গ করে অধিক লাভবেন হতে পারবেন যেই ৫টি ব্যবসা থেকে তাহলো:
- জুতা তৈরির ব্যবসা
- কলম বা খাতা তৈরির ব্যাবসা
- প্রোডাক্ট প্রিন্টিং ব্যাবসা
- ব্যাগ প্রিন্টিং ব্যবসা ও
- মোবাইল গ্লাস তৈরির ব্যাবসা।
জুতা তৈরির ব্যাবসা
জুতা এমন এটি প্রোডাক্ট যেটির চাহিদা সারা পৃথিবীব্যাপী আছে, ছিল এবং থাকবে। বিশেষ করে বাংলাদেশিদের কাছে জনপ্রিয় ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট গুলোর একটি জুতা। ছোট থেকে বড়, ছেলে মেয়ে প্রায় সকলের জন্য দৈনন্দিন জীবনে জুতা অপরিহার্য একটি বস্তু। তাই আপনি যদি জুতা তৈরির ব্যবসা করতে পারেন। তাহলে আশা করা যায় খুব দ্রুত সফল হতে পারবেন।
এছাড়াও জুতা তৈরির পর সেটি বিক্রি নিয়েও তেমন একটা চিন্তিত হতে হবে না। আপনি চাইলে নিজ দোকানে, ফুটপাতে কিংবা ভেনে করে পাইকারি ও খুচরা মূল্যে জুতা বিক্রি করতে পারবেন।
আরোও পড়ুন: ১০ হাজার টাকা বাজেটে সেরা ১০টি ব্যবসা আইডিয়া
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় জুতা গুলোর মধ্যে ক্যাঙ্গারু জুতা অন্যতম। ক্যাঙ্গারু জুতা পড়তে যেমনি আরামদায়ক তেমনি দামেও কম হয় বলে এটি ব্যবহারের অনেকে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মাত্র অল্প কিছু টাকা বাজেটে শুরু করা যাবে ক্যাঙ্গারু জুতা তৈরি ব্যবসা।
ক্যাঙ্গারু জুতা তৈরি করতে তেমন কোন মেশিনের প্রয়োজন হয় না। ছোট একটা মেশিন ক্রয় করে অল্প পরিসরে শুরু করা যাবে এই ব্যবসা। আপনার ঘরের এক কোনে শুরু করতে পারবেন ক্যাঙ্গারু জুতা তৈরির ব্যবসা। মার্কেটে প্রতি জোরা ক্যাঙ্গারু জুতা খুচরা বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে।
এবং পাইকারি ৬০-৭০ টাকা করে বিক্রি করতে পাররবেন। প্রতি জোরা ক্যাঙ্গারু জুতা তৈরি খরচ পড়বে ২০-৩০ টাকা। তাহলে একবার ভাবুনতো আপনি যদি ১০০ জোরা ক্যাঙ্গারু জুতা পাইকারিতেও বিক্রি করেন তাহলে আপনার দৈনিক ইনকাম পড়বে কত।
প্রতি জোড়া ক্যাঙ্গারু জুতা পাইকারি বিক্রি করলে লাভ থাকবে ২৫-৩০ টাকা করে। তাহলে দৈনিক ১০০ জোরা জুতা পাইকারি বিক্রি করলে লাভ হবে ৩০-১০০= ৩০০০ টাকা। অর্থাৎ মাসে ৯০ হাজার টাকা করে আয় করা যাবে। এছাড়াও খুচরা বিক্রি করলে আরোও অধিক পরিমানে লাভ করা সম্ভব।
ক্যাঙ্গারু জুতা তৈরির উপকরণ
জুতা তৈরির ব্যবসা শুরু করতে আপনার প্রয়োজন হবে জুতা তৈরির মেশিন আপনি মার্কেটে মেনুয়ালি ও অট মেশিন পেয়ে যাবেন। তারপর প্রয়োজন হবে জুতার ডাইচ। এটি আপনি যেখান থেকে মেশিন ক্রয় করবেন সেখানে পেয়ে যাবেন। এছাড়াও জুতা তৈরির অন্যান্য উপকরণ যেমন: জুতার লেইস বা ফিতা, গাম/আঠা, ফম/সোল ইত্যাদি। আপনি ঢাকা কারওয়ান বাজার, টঙ্গবাজার সহ বিভিন্ন বড় বড় পাইকারি মার্কেটে পেয়ে যাবেন।
এছাড়াও আপনি চাইলে জুতার মেশিন কিনার সময় দোকানদার থেকে এসব বিষয়ে ট্রেনিং ও প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। জুতা তৈরির মেশিন ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার ভিতরে পেয়ে যাবেন। মোট কথা আপনার যদি ৫০ হাজার টাকা বাজেট থাকে তাহলে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
কলম বা খাতা তৈরির ব্যাবসা
জুতা ছাড়াও আপনি কম বাজেটের মধ্যে কলম বা খাতা তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কম বা খাতার চাহিদা সম্পর্কে কম বেশি আমরা সকলে জানি। আপনি চাইলে অল্প পরিসরে কলম বা খাতা তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
এর জন্য আপনাকে মার্কেট থেকে একটি কলম বা খাতা তৈরির মেশিন ক্রয় করতে হবে। তারপর কম বা খাতা তৈরির জন্য অন্যান্য উপরকণ যেমন কাগজ, কলম, কালি, নিপ ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে। আপনার বাজেট যদি কম হয় তাহলে আপনি শুরুর দিকে যেকোন একটি দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আপনি যদি শুধু কলম তৈরির ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে ১০-২০ হাজার টাকা বাজেটের মধ্যে এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
কলম বা খাতা তৈরির মেশিন ক্রয় ও ট্রেনিং পেতে ইউটিউব বা সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নিতে পারেন। আপনি ইউটিউব খাতা তৈরির ব্যবসা বা কলম তৈরির ব্যবসা লিখে সার্চ করলে। বিভিন্ন কম্পানির এড্রেস ও মেশিনের আপডেট দাম সম্পর্কে জানতে পারবেন। তারপর তাদের দেওয়া এড্রেসে যোগাযোগ করে মেশিন ও অন্যান্য উকরণ ক্রয় করতে পারবেন।
প্রোডাক্ট প্রিন্টিং ব্যাবসা
গ্রাম বা শহর অঞ্চল সব জায়গা থেকে প্রোডাক্ট প্রিন্টিং ব্যাবসা শুরু করা সম্ভব। তবে গ্রাম থেকে এই ব্যবসা শুরু করলে ভালো আয় করা যাবে। কেননা গ্রাম অঞ্চলে তেমন বেশি প্রিন্টিং কম্পানি না থাকায় খুব সহজে গ্রামে এটি শুরু করা যাবে। তবে শহর অঞ্চলের জন্যও এটি একটি উপযুক্ত ব্যবসা।
প্রোডাক্ট প্রিন্টিং বলতে মূলত এখানে জামা কাপড় প্রিন্টিং, জগ,মগ, গ্লাস, গিপ্ট ইত্যাদি প্রিন্টিংকে বুঝানো হয়েছে। প্রিন্টিং ব্যবসা শুরু করলে খুব কম সময়ে অধিক পরিমানে আয় করা যাবে। কেননা বর্তমান সময়ে প্রিন্টিং এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। যেমন বিভিন্ন ক্লাব, গার্মেন্টস, কম্পানির পোশক তৈরি বা বিভিন্ন গিপ্ট তৈরির সময় প্রিন্টিং এর প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
যেমন: গার্মেন্টস কর্মীদের পোশাকের উপর কম্পানির নাম বা লোগো, খেলোয়াড়দের জার্সির উপর নাম বা নম্বর, বিবাহ অনুষ্ঠান বা জন্ম দিন/ কম্পনির উৎসব কে স্মরণীয় করতে জামা কাপড় বা গিপ্টের উপর কম্পানি ও কর্মীদের নাম ইত্যাদি জন্য প্রিন্টিং এর চাহিদা প্রচুর। তাই একবার প্রিন্টিং ব্যবসা শুরু করলে এর ইনকাম নিয়ে বা বেচা কিনা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। আপনি ইউটিউব দেখে যেকোন কম্পানির সাথে যোগাযোগ করে প্রিন্টিং মেশিন ও অন্যান্য উপকরণ ক্রয় করতে পারবেন। মোটামুটি ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মধ্যে প্রিন্টিং ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে।