১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসের সঠিক তথ্যঃ মুসলিম উম্মেহার মধ্যে অনেক গুলো দল রয়েছে। যাদের মধ্যে একটি দল ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করাকে জায়েজ মনে করে। আবার অনেকে ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন বেদায়াত মনে করেন। তাহলে এখন প্রশ্ন আসতে পারে ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ? নাকি বিদআত? কোনট সঠিক? এই পোস্টে আমরা কুররআন ও হাদিসের আলোকে সঠিক তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার অনুরোধ রইল।
১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ?
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন সম্পর্কে প্রখ্যাত ইসালামী চিন্তাবিদ আজহারি হুজুর বলেন: “আমাদের সামাজে জন্ম দিন হলে আমরা কেক কেটে অনুষ্ঠান করে জন্ম দিন পালন করি। অন্যদিকে একদল লোককে মিষ্টি ও হালুয়া খেয়ে ১২ই রবিউল আউয়াল ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করতে দেখা যায়। অথচ রাসূল (স) রোজা রাখারা মাধ্যমে ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেছেন।
আরোও পড়ুনঃ মৃত ব্যক্তির ফেসবুক বা অন্যান্য শোস্যাল মিডিয়ায় ছবি বা বেপর্দার নারীর ছবি থাকলে কি সে গুনাহগার হবে?
সাহাবীরা এই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন ” আমি ১২ই রবিউল আউয়াল এই কারণে রোজা রাখি কেনান, আল্লাহ তায়ালা চাইলে আমাকে পৃথিবীতে নাও পাঠাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নি। তিনি আমাকে করুনা করে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তার নেয়ামত স্বরূপ এই দিনে আমি একটি রোজা রেখে শুকরিয়া আদায় করি”।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীরা কখনও অনুষ্ঠানিকভাবে ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেন নি। সুতারাং মিষ্টি ও হালুয়া খেয়ে ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা নাজায়েজ। আপনি যদি রাসূল (সাঃ) কে সত্যিই ভালোবেসে থাকেন। তাহলে এই দিন একটি রোজা রাখতে পারেন।
রেফারেন্স ও তথ্য সুত্রেঃ
১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন সম্পর্কে হাদিস
অন্যদিকে অন্যান্য আলেমগণ বলেন ” ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের যে রীতিনীতি চালু হয়েছে তা মূলত রাসূলুল্লা (সাঃ) এর ওপাতের ৬০০ বছর পর থেকে চালু হয়েছে। ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালনেরর সুন্ন পদ্ধতি হলো প্রতি সোমবার। রাসুলুল্লাহ সাঃ প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন। সুতারাং এক বছর পর সোমবারে এই দিনটি পালন করা উত্তম নয়। কেননা, রাসূলের ভালোবাসা সারা বছর অন্তরে পোষণ করতে হবে। সুধু একটা দিন রাসূলের স্বরণে সভা সমাবেশ বা মিষ্টি হালুয়া খাওয়া শরীয়ত সম্মতনা।
রাসূলুল্লা (সাঃ) কে সোমবারে রোজা রাখতে দেখে সাহাবীরা জিজ্ঞেস করেন ” হে আল্লাহর রাসূল আপনি সোমবারে রোজা রাখেন কেন? রাসূল (সাঃ) বলেন ” এই দিনে আমি জন্ম গ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমি নবুওয়ত প্রাপ্ত হয়েছি” (সহী মুসলিম ১৯৮ নং হাদিস) অন্যান্য হাদিসে এসেছে রাসূল (সাঃ) বলেছেন এ দিনে আমি জন্মেছি, এই দিনে নবুওয়ত প্রাপ্ত হয়েছি এবং এই দিনে হিজরত করেছি” আমরা জানি যে রাসূলুল্লা (সাঃ) মূলত এই দিনেই মৃত্যু বরণ ও করেছেন। সুতারাং ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালনেরর সুন্ন তরিকা হলো: এই দিনে রোজা রাখা।
রেফারেন্স ও তথ্য সুত্রেঃ
যদিও ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন সম্পর্কে অনেক তর্ক বির্তক রয়েছে। তবে ইসলামের আলোকে ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা যায়েজ তবে সেটা সুন্নত তরিকায় রোজা রাখার মাধ্যমে। তবে মিষ্টি হালুয়া খেয়ে ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালান বা সাওয়াবের আশা করা সম্পূর্ণ বেদায়াত। কারণে ইসলামে জন্ম দিন বা মৃত্যু দিন উদযাপন বৈধ নয়।
অন্যদিকে যারা মিষ্টি খেয়ে ১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালান করেন। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন যেহেতু রাসূল (সাঃ) এই দিন অর্থাৎ সোমবারে জন্ম গ্রহণ করেছেন তাই মিষ্টি খাচ্ছেন। ধরে নিলাম এখানে দোষের কিছু নেই। কিন্তু আপনেরা কি ভুলে গেছেন এই দিনেই রাসূল (সাঃ) মৃত্যু বরণ করেছেন। তাহলে আপনাদের মিষ্টি খাওয়ার মানি কি দাড়াবে? রাসূল (সাঃ) জন্মতে মৃষ্টি খেলেন নাকি মৃত্যুতে? নাওজুবিল্লাহ। আল্লাহ সবাইকে সঠিকভাবে ইসলাম বুঝার তাওফিক দান করুক আমিন।
এরকম আরো ইসলামিক পোস্ট পেতে চোখ রাখুন বঙ্গভাষা ওয়েবসাইটে। এছাড়াও ইসলামকি কোন বিষয়ে জানার থাকলে অব্যশই আমাদের কমেন্ট করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ!