জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের পোস্টে। জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষা, নিরাপদ ও কার্যালয়। বর্তমান সময়ের বাংলাদেশ সরকার ডঃ ইউনুস জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা দিচ্ছে। যেটি সম্পূর্ণ করোনা টিকার মতো। তবে আপনাদের ভিতরে অনেকেই আছেন যারা জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন কিভাবে করতে হয়। সেই সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন না।
আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন করবেন। তাছাড়াও টিকা দেওয়ার পরে কিভাবে টিকার কার্ড সংগ্রহ করবেন, কোন জায়গা থেকে‘এইচপিভি টিকা’ দিবেন, কারা কারা এই টিকাটি দিতে পারবেন এবং কিভাবে টিকার সনদটি সংগ্রহ করবেন। সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকের পোস্টে। তাই ধৈর্য সহকারে আজকের পোস্টটি পড়ার অনুরোধ রইল।
জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন করার নিয়ম
জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন করার নিয়ম অনলাইনে। সাধারণত, এইচপিভি টিকা দেওয়ার জন্য আপনাকে চারটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। যেমন:
- অনলাইনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে
- এইচপিভি কর্মসূচিতে নিবন্ধন করতে হবে
- টিকাদান কার্ড ডাউনলোড করতে হবে এবং
- তাছাড়াও আপনাকে টিকা কেন্দ্রে গিয়ে টিকা গ্ৰহন করতে হবে
এইচপিভি টিকা দেওয়ার সুবিধা
এইচপিভি টিকা দেওয়ার অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক এইচপিভি টিকা দেওয়ার সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে। তাছাড়াও এইচপিভি টিকা কয় ডোজ টিকা দিতে হবে এবং কারা কারা এই টিকাটি দিতে পারবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে তুলে ধরা হলো:
- সাধারণত বাংলাদেশের নারীদের ক্যান্সার জনিত মৃত্যুর মধ্যে জরায়ু ক্যানসার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ
- তাছাড়াও এইচপিভি টিকা জরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধ করে
- সাধারণত 5ম থেকে 9ম শ্রেনিতে অধ্যায়নরত সকল ছাত্রী অথবা ১০ থেকে 14 বছরের কিশোরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বহির্ভূত কিশোরীদের জন্য এইচপিভি টিকা অধিকতর কার্যকর
- জরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা এক ডোজই যথেষ্ট
- তাছাড়াও এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত ও নিরাপদ এবং
- গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেগে সম্পুর্ন বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হচ্ছে
এইচপিভি টিকা গ্রহণের স্থান
এইচপিভি টিকা বা জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন গ্রহণের স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে তুলে ধরা হলো:
- সাধারণত 5ম থেকে 9ম শ্রেনিতে অধ্যায়নরত সকল ছাত্রী অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই টিকাটি দিতে পারবেন এবং
- আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত 10-14 বছরের কিশোরীদের ইপিআই টিকা কেন্দ্রে এইচপিভি টিকা দেওয়ার হবে
এইচপিভি টিকা কারা কারা গ্রহণ করতে পারবে
জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন বা এইচপিভি টিকা কারা কারা গ্রহণ করতে পারবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নে আলোচনা করা হলো:
- 5ম থেকে 9ম শ্রেনি অথবা সমমানে অধ্যয়নরত ছাত্রী এবং
- 10-14 বছরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরী এই টিকা গ্রহণ করতে পারবে
এইচপিভি টিকার ডোজ সংখ্যা
এইচপিভি টিকার ডোজ সংখ্যা সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে তুলে ধরা হলো:
- সাধারণত এইচপিভি টিকা 1 ডোজ যথেষ্ট
কে বা কারা এই পোর্টালে নিবন্ধন করতে পারবে
বর্তমানে 0-2 বছরের ছেলে এবং মেয়ে শিশু, 10-14 বছরের কিশোরী, 5-9ম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত মেয়ে শিক্ষকেরা এইচপিভি টিকা প্রদান করতে পারবে।
জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন করার জন্য কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে
জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন করার জন্য আপনাকে কিছু কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। সেই সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নে তুলে ধরা হলো:
- সচল একটি মোবাইল নম্বর এবং
- ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কার্ড
জরায়ু ক্যান্সার টিকা নিবন্ধন
জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন আপনি মোবাইল অথবা কম্পিউটার ব্যবহার করে আবেদন করতে পারবেন। তাহলে আপনি আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটার থেকে পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করুন এবং সার্চবারে Vaxepi.gov.bd লিখে সার্চ করুন। তাহলে আপনাকে এইচপিভি টিকার মেইন ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে এবং আপনার সামনে এমন একটি পেইজ ওপেন হবে।
তাহলে আপনি প্রথমেই চারটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- নিবন্ধন করুন
- লগইন
- টিকা কার্ড গ্রহণ এবং
- টিকা সনদ গ্রহণ
এখন আপনি প্রথম অপশন অর্থাৎ, ‘নিবন্ধন করুন’ অপশনটি নির্বাচন করুন। তাহলে আপনার সামনে নতুন একটি ফরম ওপেন হবে। এখন আপনাকে ফরমটিতে সঠিক তথ্য প্রদান করে পূরণ করতে হবে। যেমন: জন্ম তারিখ, জন্ম নিবন্ধন সনদ নম্বর এবং লিঙ্গ। তাহলে আপনি আপনার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী অপশনগুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন। তারপরে নিচে থেকে ‘ক্যাপচাটি’ সঠিকভাবে বসিয়ে ‘যাচাই করুন’ অপশনে ক্লিক করুন।
আরোও পড়ুন: মেয়েদের জন্য অনলাইন ইনকাম App ও ওয়েবসাইট।
তাহলে পরবর্তী অপশনে আপনার নাম, আপনার বাবা এবং মায়ের নাম চলে আসবে। এখন আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো: মোবাইল নম্বর অপশনে আপনার সচল একটি আপনার একটি মোবাইল নম্বর বসিয়ে দিন। এখন মোবাইল নম্বর বসানোর হয়ে গেলে একটু স্ক্রোল করে নিচে নামুন। তাহলে সেখানে ‘বর্তমান ঠিকানা’ অপশন দেখতে পাবেন। এখানে আপনার বর্তমান ঠিকানা প্রদান করতে হবে। যেমন:
- বিভাগ
- জেলা/ সিটি কর্পোরেশন
- থানা/ উপজেলা
- পৌরসভা
- ইউনিয়ান/ সি সি জোন
- ওয়ার্ড
- গ্ৰাম/মহল্লা/ পাড়া এবং
- বাড়ি/ হোল্ডিং নম্বর
তাহলে উপরে উল্লেখিত অপশনে আপনার ‘বর্তমান ঠিকানা’ অনুযায়ী পূরণ করুন। তারপরে নিচে থেকে ‘সাবমিট’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং আপনার মোবাইল নম্বরে একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে।
এখন কোডটি এখানে বসিয়ে আবারোও ‘সাবমিট’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে ‘ভ্যাক্স ইপিআই পোর্টালে নিবন্ধন সম্পূর্ণ’ হয়েছে লেখাটি চলে আসবে এবং আপনার সামনে এমন একটি ইন্টারফেস ওপেন হবে।
এখানে আপনার নাম, আপনার পিতা মাতার নাম, জন্ম সনদ ইত্যাদি তথ্য চলে আসবে। এখন আপনাকে ‘টিকাদান প্রোগ্রামে নিবন্ধন’ করতে হবে। তাহলে ‘টিকাদান প্রোগ্রামে নিবন্ধন’করার জন্য ‘নিবন্ধন করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে দুটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- 5ম থেকে 10ম বা সমমান শ্রেনিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী এবং
- 10-14 বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরী
এখন আপনি যদি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেন অর্থাৎ অধ্যয়নরত থাকেন। তাহলে ‘5ম থেকে 10ম বা সমমান শ্রেনিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী’ অপশনটি সিলেক্ট করুন। আর আপনি যদি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত না থাকেন। তাহলে ‘10-14 বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরী’ অপশনে ক্লিক করুন।
তাহলে উল্লেখিত অপশনটিতে আপনার লেখা পড়ার উপর নির্ভর করে অপশন সিলেক্ট করুন। উদাহরণ স্বরূপ, আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত রয়েছেন। তাহলে ‘5ম থেকে 10ম বা সমমান শ্রেনিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী’ অপশনটি সিলেক্ট করুন। এখন আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে আপনার অধ্যানরত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথ্য প্রদান করতে হবে। যেমন:
- বিভাগ
- জেলা/ সিটি কর্পোরেশন
- থানা/ উপজেলা
- পৌরসভা
- ইউনিয়ান/ সি সি জোন
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম এবং
- কোন শ্রেণীতে অধ্যায়নরত
তাহলে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথ্য প্রদান করে অপশন গুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন। এখন সকল অপশনগুলো সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে ‘সাবমিট’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে এমন একটি পেইজ ওপেন হবে।
এখন নিচে লক্ষ্য করলে ‘এইচপিভি ভ্যাকসিনের টিকাদানের সময়সূচী’ দেখতে পাবেন এবং সেখানে আপনার টিকার কেন্দ্র দেখতে পাবেন। এখন আপনি ‘এইচপিভি টিকা কার্ড ডাউনলোড’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার টিকার কার্ডটি ডাউনলোড হয়ে যাবে। এখন টিকার কার্ডটি আপনাকে কম্পিউটার দোকান থেকে প্রিন্ট করতে হবে।
তাহলে টিকার কার্ডটি প্রিন্ট করা হয়ে গেলে কার্ডটি আপনার কাছে রেখে দিন। তাছাড়াও আপনার টিকা দেওয়ার পরে ‘এইচপিভি টিকার ওয়েবসাইট’ থেকে নিম্নের মার্ক করা অপশনে ক্লিক করে ‘এইচপিভি টিকার সনদ ডাউনলোড’ করতে পারবেন।
উপরে উল্লেখিত তথ্য অনুসরণ করে আপনি খুব সহজেই জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন করতে পারবেন। আশা করি, আজকের পোস্টটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন। কিভাবে হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিবন্ধন করবেন।
আশা করি, বুঝাতে পেরেছি কিভাবে টিকার কার্ড সংগ্রহ করবেন, কোন জায়গা থেকে ‘এইচপিভি টিকা’ দিবেন, কারা কারা এই টিকাটি দিতে পারবেন এবং কিভাবে টিকার সনদটি সংগ্রহ করবেন। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের বঙ্গভাষা ওয়েবসাইটে ধন্যবাদ।